ফটিকছড়ি উপজেলা

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা ফটিকছড়ি এই উপজেলার দক্ষিনাঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ সমতল ভূমি । ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্মরণীয়-বরণীয়, সুফী-সাধক, আউলিয়া-দরবেশ, বুদ্ধিজীবী, শিল্পপতি, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ সমৃদ্ধ এই জনপদএ উপজেলাটি আয়তনের দিক থেকে পাশ্ববর্তী ফেনী জেলার চেয়ে বড়হালদা, ধুরুং, সর্তা বিধৌত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন সবুজ, সুন্দর বনভূমি, অসংখ্য চা বাগান, রাবার বাগান, সেগুন বাগান নিয়ে অপূর্ব শোভা মন্ডিত প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় এই সুন্দর জনপদ পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা, পশ্চিমে মীরশ্বরাই ও সীতাকুন্ড, উত্তরে রামগড় ও ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিনে হাটহাজারীজনশ্রুতি আছে যে, এ উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে একটি নদীর নামেফটিকছড়ি উপজেলার অবস্থান ছিল ভুজপুরের দক্ষিণ প্রান্তে প্রবাহিত ফটিকছড়ি নদীর তীরেএতে পরিস্কার বুঝা যায় ফটিকছড়ি থানার নামকরণ ফটিকছড়ি খাল বা নদী থেকে হয়েছে‘ফটিক’ অর্থ স্বচ্ছ, আর ছড়ি অর্থ খাল চট্টগ্রামবাসী ছোট ছোট খাল বা নদীকে ছড়া বা ছড়ি বলেযেমন- হারুয়ালছড়ি, রত্তাছড়ি. পটিয়াছড়ি, সুখনছড়ি ইত্যাদিপশ্চিমে সীতাকুন্ডু পাহার থেকে উৎপন্ন ছোট ছড়া যেমন- হেরলী, ডলুঘন্যা, নাকোঁয়া, পিনপিন্যা ও লইক্ষ্যা, ইক্ষা প্রভৃতি মিলিত স্রো্ত ধারার নাম- ফটিকছড়িইহা পশ্চিমের রিজার্ভ ফরেষ্ট ও হারুয়ালছড়ির উপর দিয়ে ভেঁকে পূর্বদিকে বাহিত হয়ে পাইন্দং ইউনিয়ওনর মোগিনী ঘাটায় এসে মূল হালদা নদীর সাথে শিলিত হয়েছে অষ্টাদশ শতব্দীর শেষের দিকে উক্ত অবস্থান থেকে ফটিকছড়ি ধুরুং ইউনিয়নের বিবিরহাট নামক স্থানে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়এতে অবশ্য নামের কোন পরিবর্তন হয়নিনদীর নামে নাম- ফটিকছড়ি উপজেলার নাম অবিকল থেকে যায়

ফটিকছড়ি উপজেলার ভৌগলিক অবস্থানঃ 

ফটিকছড়ি উপজেলা ২২.৩৫ ডিগ্রি হতে ২২.৫৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে এবং ৯১.৩৮ ডিগ্রি হতে ৯১.৫৭ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত

ফটিকছড়ি উপজেলার ইতিহাস ও সার্বিক তথ্যাদিঃ 

ফটিকছড়ি উপজেলার একটি ঐতিহাসিক অবস্থান আছে বাংলার শাসনকর্তা সুবেদার শায়েস্তা খানের পুত্র বুজুর্গ উমেদ আলী খাঁ ১৮৬৬ খৃষ্টাব্দে আরাকানের পরাজিত করে চট্টগ্রাম দখল করেন এবং নাম করন করেন ইসলামাবাদ তখন দিল্লীর বাদশা ছিলেন আওরঙ্গজেবশাসনকার্যের সুবিধার জন্য ও শান্তি শৃংখলা রক্ষাকল্পে সমগ্র এলাকাকে ৭টি চাকলায় ভাগ করে এক একটি পরগনার এক একটি নামকরণ করেনবাংলার বার ভুইঁয়া স্বাধীনতাকামী ঈসা খাঁ মুঘল সম্রাটের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করার লক্ষে বাইশপুর সমন্বয় ঐতিহাসিক ‘ইছাপুরা পরগণা’ গঠন করেন বঙ্গশার্দুল ঈসা খাঁর নামানুসারেই সাবেক ‘ইছাপুর’ পরগণাই বর্দ্ধিত কলেবরে বর্তমানের ফটিকছড়ি উপজেলা ইতিহাস-ঐতিহ্য, স্মরণীয়-বরণীয়, সুফী-সাধক, আউলিয়া-দরবেশ, বুদ্ধিজীবী, শিল্পপতি, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ সমৃদ্ধ এই জনপদউপমহাদেশের খ্যাত আউলিয়া গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী, হযরত মওলানা আহম্মদ উল্লাহ (কঃ), হযরত মওলানা গোলামুর রহমান (কঃ), হযরত জিয়াউল হক (কঃ), সুফী সাধক মুফতী গরীব উল্লাহ শাহ (রঃ), হযরত আবিদ শাহ (রাঃ), শাহ নবীদুর রহমান (রাঃ) প্রমুখ আউলিয়া দরবেশগণের পূণ্য স্মৃতি বিজড়িত উপজেলা এই ফটিকছড়ি

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা : 

চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলফটিকছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে এতিহ্যের ছোঁয়াফটিকছড়ির উলেত্মখযোগ্য স্থান বা স্থাপনাগুলো হচ্ছে- প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপনাগুলোর মধ্যে বক্তপুরের আহসান উল্লাহ গোমস্থার মসজিদ, আজাদী বাজারে অবস্থিত মুরালী মসজিদ, জাফতনগর ফতেপুরে জুনিয়র বাপের মসজিদ, আদালতখার বাড়ী, রওজা শরীফ মাইজভান্ডার শরীফ, আবদুল্লাহপুরের লাইল্লা হরাইল্লার মসজিদ, বিবির দীঘি, কোটেরপারড়, আবিদ শাহের মাজার, জাহানপুরের কুন্ডুর কাচারী, বড়ুয়া পাড়ার কেয়াং, আবদুল্লাহপুর মন্দির, হারুয়ালছড়ির কোম্পানীটিলা, ভুজপুর ফাঁসির ঘর, শ্মশান কালিমট, বন্দে রাজা মসজিদ, মুন্সি গরীবুল্লাহ জামে মসজিদ, আজাদী বাজারের আয়না দিয়া মসজিদ, কাঞ্চনপুরের উকিল বাড়ী, জাহানপুরের মুফতি মসজিদ, পাইন্দং এর পেলাগাজী মসজিদ ও দিঘী, হাইদচকিয়া বৌদ্ধ বিহার এবং গুরুদাশ ঠাকুরের মন্দির উল্লেখযোগ্য

এক নজরে ফটিকছড়ি উপজেলা:

আয়তন ৭৫৬.২৮ বর্গ কিলোমিটার. জনসংখ্যাঃ ৪৪১৮৬৩ জন. পুরুষঃ ২,২৬,৩১৬ জন. মহিলাঃ ২,১৫,৫৪৭জন. ঘনত্বঃ ৫৭১ জন. নির্বাচনী এলাকাঃ ২৭৯ চট্টগ্রাম- ২ (ফটিকছড়ি) থানাঃ ২ টি (ফটিকছড়ি থানা, ভুজপুর থানা).  মৌজাঃ ৯৭টি. সরকারী হাসপাতালঃ ২টি.  স্বাস্থ্য কেন্দ্র/ ক্লিনিকঃ ১৭ টি.  পোষ্ট অফিসঃ ৩০ টি. নদ-নদীঃ ২ টি. হাট-বাজারঃ ৪৮ টি. ব্যাংকঃ ২৭ টি. ২০ ইউনিয়নে ৬০ টি ওয়ার্ড.  ১৯৭ টি গ্রাম.  ৭০,০৬৫ টি বাড়ী.  এবং ১,৮৩,৯৯৬.৫৩ একর জমি.  ১৯ টি চা বাগান.  ৫টি কলেজ.  ৪৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়.  ৮টি বালিকা বিদ্যালয়.  ৪টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়.  কামিল, আলিম, দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ৩১ টি মাদ্রাসা. ৩০০ টি এবতেদায়ী ও কওমী মাদ্রাসা. ১৩৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়.  ৫৬ টি রেজিস্টার্ডর্ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়.  ৪ টি অনুমোদিত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়. ২৫ টি কিন্ডারগার্টেন.  ১৭টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়.  হাটবাজার ৪৮টি.  মোট রাস্তা ৬২০ কিলোমিটার.  মোট ব্রিজ সংখ্যা ১১৫টি.  মোট কালভার্ট ২৫০টি.  মোট নলকুপ ৪৫০০টি. মসজিদ ৪৫০টি.  মন্দির ৭২টি.  গীর্জা ১টি এবং অন্যান্য ৩৪টি.  আশ্রয়ন প্রকল্প ০৪টি.  আবাসন প্রকল্প ০১ টি.  টেলিফো্ন একচেঞ্জ ৪টি.  বিদ্যুতায়িত গ্রাম ১১২টি.  প্রধান প্রধান ফসল ধান, আলু, মরিচ, আদা, বেগুন, মিষ্টি আলু, ফেলন ডাল, শাক-সবজি ইত্যাদি

অবস্থানঃ 
ফটিকছড়ি উপজেলা ২২.৩৫ ডিগ্রি হতে ২২.৫৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে এবং ৯১.৩৮ ডিগ্রি হতে ৯১.৫৭ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত

সীমানাঃ 
পূর্বে মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি ও রাউজান উপজেলা, পশ্চিমে মীরশ্বরাই ও সীতাকুন্ড, উত্তরে রামগড় ও ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিনে হাটহাজারী

ফটিকছড়ি উপজেলায় ২টি পৌরসভা এবং মোট ১৯টি ইউনিয়ন আছে ইউনিয়নের নামগুলো নিম্নরূপঃ   

পৌরসভাঃ ১. ফটিকছড়ি পৌরসভা এবং ২.নাজিরহাট পৌরসভা । 

ইউনিয়নঃ  ১. বাগানবাজার ২. দাঁতমারা ৩.নারায়ণহাট ৪.ভুজপুর ৫. হারুয়ালছড়ি ৬.পাইন্দং ৭.কাঞ্চন নগর  ৮. সুন্দরপুর ৯.সুয়াবিল ১০. দৌলতপুর ১১. লেলাং ১২. নানুপুর ১৩. রোসাংগিরি ১৪. বখ্তপুর ১৫. জাফত নগর ১৬.ধর্মপুর ১৭.সমিতিরহাট,  ১৮.আব্দুল্লাহপুর এবং ১৯. কিরাম ।


Fatikchhari is a sub-district or Upazila located in the Chattogram District of Bangladesh. It is situated in the southeastern part of the country and covers an area of around 773.54 square kilometers. The sub-district is known for its natural beauty, as it is surrounded by hills, forests, and rivers. 


The sub-district of Fatikchhari is home to a diverse population, with people from various ethnic and religious backgrounds living in the area. The main languages spoken in Fatikchhari are Bengali and Chakma, although other languages such as Marma and Tripura are also spoken by some of the local communities. 


Economically, agriculture is the main source of income for the people of Fatikchhari. The fertile land in the area is ideal for cultivating crops such as paddy, jute, and vegetables. In addition, the sub-district is also known for its small-scale industries, such as handloom weaving and bamboo crafts. 


Overall, Fatikchhari is a beautiful and culturally rich sub-district that offers a unique blend of natural beauty and traditional charm. Its stunning landscapes, diverse population, and thriving economy make it a fascinating place to visit and explore. Fatikchhari Upazila is becoming digital day by day due to the effect of digitization. Now Fatickchari can be called Digital Fatickchari.